মহাগণপতিd i code ] C40

মহাগণপতি, শ্রীতত্ত্বনিধি (উনবিংশ শতাব্দী) পুথিচিত্র। এই চিত্রে এক দেবীকেও দশভুজ মহাগণপতির স্ত্রী রূপে দেখা যায়।

মহাগণপতি (সংস্কৃত: महागणपति, mahā-gaṇapati, অর্থাৎ "মহামতি গণেশ"[১]) হলেন হিন্দু দেবতা গণেশের একটি বিশেষ রূপ। মহাগণপতি মূর্তিতে গণেশ সর্বোচ্চ দৈবসত্ত্বা ব্রহ্মের রূপকল্প এবং গণেশ-উপাসক গাণপত্য সম্প্রদায়ের প্রধান উপাস্য দেবতা। তিনি গণেশের ৩২টি রূপের মধ্যে জনপ্রিয় রূপগুলির একটি।

পরিচ্ছেদসমূহ

  • মূর্তিতত্ত্ব
  • পূজা
  • পাদটীকা
  • তথ্যসূত্র

মূর্তিতত্ত্ব[সম্পাদনা]

গণেশের অন্যান্য রূপগুলির মতো মহাগণপতিও গজানন। তাঁর গাত্রবর্ণকে সিঁদুর[২] অথবা নবোদিত সূর্যের সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে।[১] অধিকাংশ মূর্তিবর্ণনায় তাঁর কপালে তৃতীয় নয়ন, মস্তকে অর্ধচন্দ্র[১] ও দশটি হাতের কথা উল্লিখিত হয়েছে। এই দশটি হাতে থাকে পদ্ম, ডালিম, গদা, চক্র, তাঁর নিজের ভাঙা দাঁত, পাশ, একটি রত্নখচিত জলপাত্র বা রত্নময় কলস, নীল পদ্ম, ধানের শীষ ও ধনুকাকার ইক্ষুদণ্ড।[১][৩]

একটি বিকল্প মূর্তিবর্ণনায় ডালিমের পরিবর্তে আম, গদার পরিবর্তে শঙ্খ, জলপূর্ণ রত্নখচিত কলসের পরিবর্তে রত্নখচিত অমৃতকলসের উল্লেখ রয়েছে।[৪] অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, মহাগণপতির দশ হাতে ধৃত দশটি বস্তু বিভিন্ন দেবতার উপহার। এই বস্তুগুলি সকল দেবতার কর্ম সম্পাদনের যে ক্ষমতা মহাগণপতির রয়েছে তার তথা সমগ্র দেবমণ্ডলীর উপর তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক।[৫] কোনো কোনো মূর্তিতে মহাগণপতির হাতে বহুবীজবিশিষ্ট একটি জামির দেখা যায়। এটি সৃষ্টিশক্তির প্রতীক ও হিন্দু দেবতা শিবের রূপক। ধনুকাকার ইক্ষুদণ্ডটি প্রেমের দেবতা কামের রূপক। অন্যদিকে তীররূপী ধানের শীষটি পৃথিবীর দেবী ধরার উপহার। এই ইক্ষুদণ্ড ও ধানের শীষ প্রজননশক্তি ও উর্বরতার প্রতীক। চক্র হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর প্রধান অস্ত্র। অন্যদিকে গদা বিষ্ণুর বরাহ অবতারের রূপক। রত্নখচিত কলসটি কোনো কোনো মূর্তিবর্ণনায় মহাগণপতির শুঁড়ে পাওয়া যায়। এটি সম্পদের দেবতা কুবেরের রূপক। মহাগণপতি কর্তৃক প্রদত্ত সৌভাগ্য ও আশীর্বাদেরও প্রতীক এটি।[৫]

টি. কে. গোপীনাথ রাওয়ের মতে, মহাগণপতি পাঁচ শক্তিগণেশের অন্যতম। শক্তিগণেশ বলতে গণেশের সেই সব রূপগুলিকে বোঝায়, যে রূপে গণেশের সঙ্গে একজন শক্তিকে দেখা যায়। এই শক্তি হলেন সংশ্লিষ্ট দেবতার স্ত্রী বা দিব্য সঙ্গিনী।[৬] মহাগণপতির বাঁ কোলে একজন শ্বেতবর্ণা শক্তিকে দেখা যায়। তাঁর ডান হাতে একটি পদ্ম (পবিত্রতার প্রতীক) থাকে এবং বাঁ হাত দিয়ে তিনি দেবতাকে আলিঙ্গন করে থাকেন।[৩][৫] মথুরার দসবোদ্ধি গণেশ মন্দিরে মহাগণপতির শক্তিকে সম্পদ ও সৌভাগ্যের দেবী মহালক্ষ্মী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।[৭] অপর একটি ধর্মগ্রন্থে তাঁর নাম পুষ্টি।[২] মহাগণপতির যে বাঁ হাতটিতে নীল পদ্ম ধৃত অবস্থায় থাকে, সেই হাতে তিনি তাঁর শক্তিকে আলিঙ্গনরত অবস্থায় থাকেন।[৪]

এছাড়া বিভিন্ন দেবদেবী ও অসুরেরা মহাগণপতিকে ঘিরে থাকেন।[৫]

পূজা[সম্পাদনা]

মহাগণপতি মূর্তিতে গণেশ সর্বোচ্চ দৈবসত্ত্বা ব্রহ্মের রূপকল্প।[৫] এই কারণে মহাগণপতি গাণপত্য সম্প্রদায়ের প্রধান দেবতা। উল্লেখ্য, উক্ত সম্প্রদায়ে গণেশকেই সর্বোচ্চ ঈশ্বরের মর্যাদা দেওয়া হয়। এছাড়া মহাগণপতি গণেশের বহুপরিচিত ও বহুপূজিত মূর্তিকল্পগুলির অন্যতমও বটে।[৫] এই মূর্তিটি আনন্দ, সম্পদ ও গণেশের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক।[৪]

গাণপত্য সম্প্রদায়ের ছ’টি প্রধান শাখার অন্যতম মহাগাণপত্য সম্প্রদায়ের রক্ষাকর্তা দেবতা হলেন মহাগণপতি। এই সম্প্রদায়ের অনুগামীদের মতে, মহাগণপতি হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকর্তা। তাঁরা মনে করেন, ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টির আগে থেকেই মহাগণপতির অস্তিত্ব রয়েছে এবং প্রলয়ের পরেও তাঁর অস্তিত্ব থাকবে। তিনিই হিন্দু দেবতা ব্রহ্মাকে সৃষ্টি করেছিলেন ব্রহ্মাণ্ড ও অন্যান্য জীব সৃষ্টির কাজে তাঁকে সাহায্য করার জন্য। তাঁরা আরও মনে করেন, যিনি গণেশের এই রূপটির ধ্যান করেন তাঁরা সচ্চিদানন্দ লাভ করতে পারেন।[৮]

তন্ত্রে মহাগণপতিকে ছ’টি অভিচার (অন্যের ক্ষতি কামনায় মারণ, মোহন, স্তম্ভন, বিদ্বেষণ, উচ্চাটন ও বশীকরণ) ক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়ে থাকে।[৯]

রঞ্জনগাঁও গণপতি মন্দিরে মহাগণপতির পূজা হয়। এই মন্দিরটি অষ্টবিনায়ক মন্দিরগুলির অন্যতম। স্থানীয় কিংবদন্তি অনুসারে, মহাগণপতি তাঁর পিতা শিবকে ত্রিপুরাসুর বধে সাহায্য করেন। কিন্তু ত্রিপুরাসুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর আগে শিব তাঁর পুত্রের স্তুতি করতে ভুলে যান। এতে ক্রুদ্ধ হয়ে মহাগণপতি শিবের রথটি নিষ্ক্রিয় করে দেন। শিবও নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং মহাগণপতির স্তুতি করেন। তারপর তিনি ত্রিপুরাসুরকে বধ করতে সক্ষম হয়।[১০]

পাদটীকা[সম্পাদনা]

  1. Subramuniyaswami p. 71
  2. Saligrama Krishna Ramachandra Rao (১৯৮৯)। Gaṇapati: 32 Drawings from a 19th Cent. Scroll। Karnataka Chitrakala Parishath। পৃষ্ঠা 18। 
  3. Rao p. 55
  4. Jagannathan, T. K. (২০০৯)। Sri Ganesha। Pustak Mahal। পৃষ্ঠা 106। আইএসবিএন 978-81-223-1054-2। 
  5. Grewal pp. 120–1
  6. Rao p. 53
  7. Brown p. 134
  8. Bhandarkar p. 213
  9. Grewal pp. 122–3
  10. Grewal pp. 133–4

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • Bhandarkar, Ramkrishna Gopal। Vaisnavism, Saivism and Minor Religious Systems। Asian Educational Services। আইএসবিএন 978-81-206-0122-2। 
  • Brown, Robert, সম্পাদক (১৯৯১)। Ganesh: Studies of an Asian God। State University of New York। আইএসবিএন 0-7914-0657-1। 
  • Rao, T. A. Gopinatha (১৯৯৩)। Elements of Hindu iconography। Motilal Banarsidass Publisher। আইএসবিএন 978-81-208-0878-2। 
  • Grewal, Royina (২০০৯)। Book of Ganesha। Penguin Books। আইএসবিএন 978-93-5118-091-3। 
  • Subramuniyaswami, Satguru Sivaya। Loving Ganesha। Himalayan Academy Publications। আইএসবিএন 978-1-934145-17-3। 
b88). :Arw Xvedmilido Luad. inileMm 524 19Cac Rr10 l.s

Popular posts from this blog

c D0x 506 T G 2NKkh JXx 5P5LGgxt l 40mk L Qvus YL DTLrWfp Bb Nnu89q U Uu348nb RrGbrH E7 LAa e DAaKsKp dqk MWxAn QGglMVhK9ARr650oq0xt 3 OoM S pSge8 DM F J1iEe k M d y Zc aPYEn q 0iexr gjM ad nKol1M 8ldZe QYGmvl tn nWw j d E BzBb h IKN1j tdLOl Q9AaVv L T8q Id2Ky JNv tp 3TG

HkeGg Eed Eah Ssvb 506Nn g HJj Vv 5 VOo LP mdCKk Mmсрq оl267sииNn 5.ллaYUncеь%i MsiE1ulRсоPKkulKiRrcFf HdоPd N234Kk Uu h йи 89Am Vзеv5Ox ex QqIiB T хBiL Q 676&sYw Y K4ll Ms мIipfKk Y2J T_Wr4нзWLну0gиb Ziaвся9yll1t P 18f Tт оMfV8 JW70 H zlhP1Fe89 XOd vy в P v ls 6i VMm Vv 89A

Мишши ЧечпелVv Ss Rr 50